অপরাহ্ণ ১১:৫৩, বুধবার, ২০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Breaking News

খাস জমি: অধিকার, লংঘন ও প্রতিকার

খাস জমি বলতে সরকারি মালিকানাধীন জমিকে বোঝায়, যা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার করা হয়। ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্টের ৭৬ ধারায় এই জমি সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। ভূমিহীন এবং প্রয়োজনীয় জনগণের জন্য এই জমি বরাদ্দ নীতিমালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লেখায় আমরা খাস জমির অধিকার, লঙ্ঘন এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো।

খাস জমি অধিকার

খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালার আওতায় ভূমিহীন এবং সাধারণ জনগণের জন্য নিচের সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে:

  1. তথ্য জানার অধিকার: সরকারি জমি সংরক্ষণ এবং ব্যবহারের তথ্য জানার সুযোগ সবার রয়েছে।
  2. জমি বরাদ্দের সুযোগ: ভূমিহীন ব্যক্তি নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় খাস জমি পাওয়ার আবেদন করতে পারেন।
  3. ভুল জমি সংশোধন: ব্যক্তিগত জমিকে ভুলক্রমে সরকারি জমি হিসেবে চিহ্নিত হলে তা সংশোধনের অধিকার।
  4. আপিল করার সুযোগ: জমি সংক্রান্ত যে কোনো বিরোধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা যায়।
  5. পুনর্বাসন সুবিধা: বরাদ্দপ্রাপ্তদের জন্য পুনর্বাসন কার্ড প্রদান নিশ্চিত করা হয়েছে।
  6. বিশেষ প্রকল্পের জমি বরাদ্দ: বৈজ্ঞানিক চাষাবাদ, শিল্প প্রতিষ্ঠান বা অন্য প্রকল্পের জন্য জমি বরাদ্দের সুযোগ।
  7. উত্তরাধিকারীর নামে হস্তান্তর: বরাদ্দপ্রাপ্ত জমি উত্তরাধিকারীর নামে হস্তান্তর করা যায়।

খাস জমি ব্যবস্থাপনায় সমস্যা

কিছু ক্ষেত্রে জমি ব্যবস্থাপনায় লঙ্ঘন ঘটে, যা সাধারণ জনগণের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়:

  • সরকারি জমি চিহ্নিত না করা।
  • ভূমিহীনদের জমি বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় বিলম্ব।
  • ভুল জমি অধিগ্রহণের পরে সংশোধন না করা।
  • আপিল করার সুযোগ সীমাবদ্ধ রাখা।
  • জমি ব্যবস্থাপনার সময়সীমা মেনে না চলা।
খাস জমি অধিকার, লংঘন ও প্রতিকার

প্রতিকার

যদি খাস জমি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তবে নিম্নলিখিত ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে:

  1. লিখিত অভিযোগ দাখিল: সমস্যার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার কমিটিতে দরখাস্ত জমা দিন।
  2. আপিল প্রক্রিয়া:
    • থানা কমিটির সিদ্ধান্তে আপত্তি থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করুন।
    • জেলা পর্যায়ের সিদ্ধান্তে আপত্তি থাকলে জাতীয় নির্বাহী কমিটির কাছে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করুন।

প্রয়োজনে আইনি সহায়তার জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

উপসংহার

সরকারি জমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাস জমির অধিকার সুরক্ষার জন্য প্রাসঙ্গিক নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ এবং কার্যকর মনিটরিং প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আপিল প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং কার্যকর করা উচিত।

Facebook
Pinterest
Reddit
WhatsApp
Print
মোঃ_আবুল_কালাম_আজাদ_vumi_jorip

মোঃ আবুল কালাম আজাদ

সাবেক প্রশিক্ষক, ময়নামতি সার্ভে ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

আরো পড়ুন

পারিবারিক নিরূপণপত্র দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু খরচ এবং ফি পরিশোধ করতে হয়। এখানে দলিল রেজিস্ট্রেশনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।

মৌজা ম্যাপ জমির সঠিক অবস্থান, দাগ নম্বর এবং জরিপের তথ্য জানার অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে, ভূমি জরিপ কার্যক্রমের আওতায় দেশের বেশিরভাগ এলাকার বি আর এস ও আর এস জরিপ থেকে মৌজা ম্যাপ অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

আপনি কি জমির বৈধ মালিকানা সম্পর্কে জানতে চান? জমির সঠিক দখল নিশ্চিত করতে মালিকের নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতিতে জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, জমির পরিমাণ এবং তার অবস্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানা যায়।