পূর্বাহ্ণ ০১:৫০, শুক্রবার, ১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Breaking News

খাস জমি কি এবং খাস জমি চেনার উপায় জানুন ২০২৪

খাস জমি কি এবং খাস জমি চেনার উপায় জানুন ২০২৪ - vumijorip.com

খাস জমি কি, খাস জমি কাকে বলে এবং খাস জমি চেনার উপায় জানতে পারবেন এই পোস্টে। কীভাবে দেখেই বুঝতে পারবেন যে কোন জমিটি খাস জমি এবং কোনটি মালিকানাভুক্ত জমি সেটি নিয়ে আলোচনা করবো এই পোস্টে।

অনেকেই খাস জমি কাকে বলে জানেন না। এছাড়াও, খাস জমি চেনার উপায় সম্পর্কেও অধিকাংশ মানুষ জানেন না। তো চলুন, খাস জমি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে নেয়া যাক।

খাস জমি কি এবং খাস জমি চেনার উপায় জানুন ২০২৪ - vumijorip.com
খাস জমি

খাস জমি কি

খাস জমি বলতে বোঝায় সরকারের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণাধীন যেকোনো ভূমি। এসকল জমি সরকার কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করা হতে পারে অথবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা হতে পারে।

খাস জমি আবার দুই প্রকার। এগুলো হচ্ছে, কৃষি খাস জমি এবং অকৃষি খাস জমি। কৃষি খাস জমি এবং অকৃষি খাস জমি আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে বন্দোবস্ত করার সুযোগ দেয়া হয়।

কৃষি খাস জমি

কৃষি খাস জমিগুলো কৃষি কাজের জন্য বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। যে কেউ চাইলে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত করার অধিকার পেতে পারেন।

অকৃষি খাস জমি

অকৃষি খাস জমিগুলো কৃষি কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। যেমন: আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প, প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, খাল-বিল, ইত্যাদি। কৃষি কাজ ব্যতীত এসব কাজের জন্য চাইলেই জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে যে কেউ এসব খাস জমির বন্দোবস্ত নিতে পারবেন।

খাস জমি চেনার উপায়

খাস জমি চেনার উপায় হচ্ছে ৮ নম্বর রেজিস্টার তল্লাশি, খতিয়ান ও দাগ নম্বর যাচাই, মালিকানা যাচাই ইত্যাদি। খাস জমি খুঁজে পাওয়ার উপায় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে ৮ নম্বর রেজিস্ট্রার তল্লাশি করা। এই রেজিস্ট্রারে কেবলমাত্র সরকারের মালিকানাধীন জমিগুলোর তথ্যই সংরক্ষিত থাকে।

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে সহজেই যেকোনো খাস জমি বের করে নিতে পারবেন। এছাড়াও, জমির খতিয়ান নাম্বর ১ হলে এবং দাগ নাম্বারের পাশে খাস উল্লেখ থাকলে সেটি খাস জমি। জমির মালিকানা যাচাই করার মাধ্যমেও জমিটি খাস কিনা যাচাই করা যায়।

এছাড়াও, এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খাস জমি চিনতে পারবেন। খাস জমি সাধারণত বড় আকারের হয় এবং খাস জমি ফাঁকা থাকে কিংবা সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থাকে এগুলোতে।

সরকারি খাস জমির বৈশিষ্ট্য

সরকারি খাস জমির কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। যা দেখে সহজেই খাস জমি চিহ্নিত করা সম্ভব। নিম্নে এই বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করে দেয়া রয়েছে।

  • খাস জমির মালিকানা সরকারের
  • খাস জমি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকবে না
  • খাস জমিগুলো উক্ত জেলা প্রশাসকের অধীনে সংরক্ষিত থাকে
  • সাধারণত খাস জমি ফাঁকা কিংবা সরকারি ভবন থাকে
  • খাস জমির কোনো খাজনা দিতে হয় না
  • খাস জমিগুলো সরকারি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখে সহজেই খাস জমি চিহ্নিত করতে পারবেন। প্রতিটি খাস জমির একই ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

খাস জমি কি বিক্রি করা যায়

না, খাস জমি বিক্রি করা যায় না। কারণ খাস জমির মালিকানা সরকারের। এসকল জমি বিভিন্ন জনস্বার্থে ব্যবহার করা হয়। খাস জমি বিক্রি করার চেষ্টা করলে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনেক অসাধু ব্যক্তি সরকারি খাস জমি নিজের বলে বিক্রি করার চেষ্টা করে থাকেন।

এজন্য, জমি কেনার পূর্বে খাস জমি চেনার উপায় জানতে হবে। তাহলে, ভুল করে সরকারি খাস জমি কিনে ফেলার ভয় থাকবে না। খাস জমির মালিকানা এবং অধিকার সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের। তাই, এই ধরনের জমি অবৈধভাবে অধিগ্রহণ এবং ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

খাস জমি দলিল করার নিয়ম

যেকোনো ব্যক্তি চাইলে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করার মাধ্যমে খাস জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নিতে পারবে। এজন্য খাস জমি রেকর্ড করার নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তবে, খাস জমি রেকর্ড করতে চাইলে উক্ত ব্যক্তিকে জমিহীন বা সর্বোচ্চ ১০ শতক জমির মালিক হতে হবে।

খাস জমি কারা লিজ নিতে পারবে

বাংলাদেশের নাগরিক এমন যেকোনো ব্যক্তি ১০০ শতক জমি সর্বোচ্চ ৯৯ বছরের জন্য খাস জমি লিজ নিতে পারবে। খাস জমি দুই ধরনের হয়। কৃষি খাস জমি এবং অকৃষি খাস জমি। এই দুই ধরনের জমিই দুই ধরনের উদ্দেশ্যে নিয়ে লিজ নেয়া যাবে। এজন্য, জেলা প্রশাসকের নিকট জমি লিজ নেয়ার আবেদন করতে হবে।

Facebook
Pinterest
Reddit
WhatsApp
Print
মোঃ_আবুল_কালাম_আজাদ_vumi_jorip

মোঃ আবুল কালাম আজাদ

সাবেক প্রশিক্ষক, ময়নামতি সার্ভে ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

আরো পড়ুন

পারিবারিক নিরূপণপত্র দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু খরচ এবং ফি পরিশোধ করতে হয়। এখানে দলিল রেজিস্ট্রেশনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।

মৌজা ম্যাপ জমির সঠিক অবস্থান, দাগ নম্বর এবং জরিপের তথ্য জানার অন্যতম মাধ্যম। বর্তমানে, ভূমি জরিপ কার্যক্রমের আওতায় দেশের বেশিরভাগ এলাকার বি আর এস ও আর এস জরিপ থেকে মৌজা ম্যাপ অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

আপনি কি জমির বৈধ মালিকানা সম্পর্কে জানতে চান? জমির সঠিক দখল নিশ্চিত করতে মালিকের নাম দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতিতে জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, জমির পরিমাণ এবং তার অবস্থান সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানা যায়।