জমি-জমার মামলা দায়ের করার জন্য সঠিক আদালত নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আপনার মামলার সঠিক ও দ্রুত নিষ্পত্তির নিশ্চয়তা প্রদান করে। দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ অনুযায়ী, বিভিন্ন ধারা অনুসারে জমি-জমার মামলার জন্য আদালতের এখতিয়ার নির্ধারণ করা হয়েছে। নিচে উল্লেখিত নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করলে আপনি সঠিক আদালত নির্বাচন করতে পারবেন:
১. জমি-জমার মামলা দায়েরের স্থান
ধারা ১৬ অনুযায়ী, জমি-জমার মামলা দায়েরের জন্য নিম্নলিখিত স্থান নির্বাচন করা উচিত:
- স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার: যদি আপনার মামলা স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের জন্য হয়, তবে এটি সেই আদালতে দায়ের করতে হবে যেখানে সম্পত্তি অবস্থিত।
- সম্পত্তি বাটোয়ারার মামলা: স্থাবর সম্পত্তি বাটোয়ারার জন্য মামলা করতে হবে সেই আদালতে যেখানে সম্পত্তি অবস্থিত।
- অস্থাবর সম্পত্তি: যদি অস্থাবর সম্পত্তি (যেমন, সিকিউরিটি) আটক করা হয়, তাহলে মামলা সেই আদালতে দায়ের করতে হবে যেখানে সম্পত্তি আটক করা হয়েছে।
২. বিভিন্ন আদালতের এখতিয়ার
ধারা ১৭ অনুসারে, যদি জমি-জমার সম্পত্তি একাধিক আদালতের এখতিয়ারে থাকে, তাহলে মামলা যে আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে সম্পত্তির অংশ অবস্থিত, সেখানে দায়ের করা যেতে পারে। তবে, মামলার মূল্য সম্পর্কিত সম্পূর্ণ দাবী সেই আদালতে বিচারযোগ্য হতে হবে।
৩. স্থানীয় এখতিয়ার অনিশ্চয়তা
ধারা ১৮ অনুযায়ী, যদি জমি-জমার সম্পত্তি একাধিক আদালতের স্থানীয় সীমানার মধ্যে অবস্থিত হয় এবং সঠিক আদালত নির্ধারণে অনিশ্চয়তা থাকে, তাহলে যে আদালত সন্তুষ্ট হবে, সেটি মামলা গ্রহণ করতে পারে। তবে, মামলার প্রকৃতি ও মূল্য অনুযায়ী আদালতের এখতিয়ার প্রয়োগ করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
৪. ক্ষতিপূরণ মামলার স্থান
ধারা ১৯ অনুসারে, যদি ক্ষতিপূরণের মামলা হয় এবং অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতি এক আদালতের এখতিয়ারে ঘটে এবং বিবাদী অন্য আদালতের এখতিয়ারে বাস করে, তাহলে বাদী তার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো এক আদালতে মামলা করতে পারে।
উদাহরণ:
- চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে বসবাসকারী ব্যক্তি যদি ঢাকায় কাউকে আঘাত করে, তবে ঢাকা অথবা চট্টগ্রামে মামলা করা যেতে পারে।
- ঢাকা: ঢাকায় মানহানিকর বিবৃতি প্রকাশ করলে, মামলা ঢাকায় অথবা চট্টগ্রামে করা যেতে পারে।
এই নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করে, আপনি নিশ্চিত করতে পারেন যে আপনার জমি-জমার মামলা সঠিক আদালতে দায়ের হচ্ছে এবং দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে।